হোয়াটস-অ্যাপের ফ্যামিলি গ্রুপে রাতুর এত সুন্দর লেখা পড়ে আমারও কেমন যেন বেশ লেখা-লেখা পাচ্ছে। এটা অনেকটা সেই খোঁড়ার অলিম্পিক দৌড়নোর ইচ্ছের মত। খোঁড়া বলে কি কিছুই করব না? অলিম্পিক না দৌড়োই, আট-দশ পা হাঁটার চেষ্টা করতে আপত্তি কোথায়?
এই তো সেদিনের কথা। তখন আমি কিছুটা ছোট সাইজের ছিলাম, আরে না না, পাড়ার হুলো বেড়ালটার থেকে বেশ কিছুটা বড়ই ছিলাম। সে কি, এতে হাসার কী আছে? মানুষকে এরকম টাক-মাথারই থাকতে হবে এরকম কোন মাথার দিব্যি আছে নাকি? বিশ্বাস কর বা না কর তখন আমার মাথা ভর্তি চুল ছিল আর ভুঁড়ি একেবারেই ছিলনা।
যাদবপুরে আমার এক স্বপ্নপুরী ছিল। হ্যাঁ, ওই সেই সাদা গোল বাড়িটা, আর তার ব্রাউন রঙের দরজা, একটা গোল হাতল যেটা ঘোরালেই দরজা খুলে যেত, আর সেই দরজার ওপরে পিতলের ফলকে লেখা 37/5 জ্বল-জ্বল করত। বাড়ীর সামনে এক-ফালি জমি, তাতে কিছুটা বাগান, জমি পেরিয়ে লাল সিমেন্টে সবুজ বর্ডার দেওয়া বারান্দা। জাদু ছিল ওই দরজা পেরিয়ে।
দরজা পেরিয়ে ছোট্ট একটা ঘর, এ ঘরের চেহারা মাঝে মাঝেই বদলাত। কখন তাতে পড়ার টেবিল, কখন বসার জায়গা, কখনো খালি, কখন মোটর-সাইকেল, কখন কোন সকালে টেবিলের ওপর চেয়ার চড়িয়ে তার ওপর ছোট্ট দাদার গ্যাঁট হয়ে বসে মহারাজ হয়ে যাওয়া, বা দেখিয়ে দেখিয়ে মজা করে অল্প অল্প নুন খেতে খেতে ছোড়দির গুন-গুন করে গান গাওয়া। জিজ্ঞেস করলাম, “কি খাচ্ছিস রে?” উত্তর এলো “খাবি?” বললাম, “হ্যাঁ”। “তাহলে চোখ বন্ধ করে হা কর।“ তার পর মুখে এক মুঠো নুন ঠুসে দেওয়া — হা হা হা হা হা।
সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ৽ কলকাতা ৽ ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০২৪