৬০ পেরিয়ে

৬০ পার করাটা অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলনা| কুষ্ঠিতে ছিলনা তাও পৌঁছেই গেলাম|এগার বছর বয়সেই সটকে যাবার কথা ছিল, তার জায়গায় ষাট! অতএব এ পর্যন্ত ৪৯ বছর ফাউ| ফাউ সবারই ভালো লাগে, সত্যি বলতে কি আমারও অল্প অল্প লাগে| জন্মদিনের দুদিন আগে জানতে পারলাম আমার শ্রীমতীজী কিছু একটা ফাঁদছেন, টের পেলাম উনি ছাত্র-ছাত্রীদের সাথেও কথাবার্তা বলছেন| ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে ওঠার পরই তাড়াতাড়ি ইউনিভার্সিটি থেকে ঘরে ফেরার ফরমান জারী হল|

বিকেল সাড়ে-চারটে নাগাদ বাড়ী ফিরে দেখি সাবির সেই বর্ধমান থেকে আমার আগেই হাজির| এরপর আস্তে আস্তে অন্যরাও হাজির হল| ত্রৈলী সেই হাওড়া থেকে সাবির এর পর-পরই চলে এল | একটু পর ঢুকল সুমেধা| এর মাঝে সাবির আর অনির্বান টুক করে গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে কিছু বিশালাকায় পাত্রে খাবার নিয়ে চলে এসেছে| নভনীল, বাড়ীতে শোকের পরিবেশ থাকা সত্তেও, অল্প সময়ের জন্য চলে এসেছিল| ওকে পেয়ে আমাদের খুব ভাল লেগেছিল| সন্ধে গড়িয়ে গেলে এল দীপঙ্কর, অনুশ্রী আর তাদের ছোট্ট মিষ্টি মেয়ে| মাঝে বনুদি আর অঞ্জনদা| একটু রাত করেই দিলীপ আর সপরিবার পরিমল ঢুকল| সবশেষে এল সুজু, অরুন আর পুকলাই| ওরা যখন এলো তখন পার্টি বেশ জমজমাট| অনির্বাণ সরোদ নিয়ে বাজনার ঘরে বাজিয়ে চলেছে| মাঝের বড় ঘরে গান, হাসাহাসি, কবিতা| আর মা’র ঘরে অঞ্জনদা, বনুদি আর পরে জুড়ল আমার মেয়ে মিম্মাই| সেখানেও চলছে নানা মজার মজার গল্প-গুজব| আর অন্য ঘরগুলো? সেখানে ঢাই করা জিনিস-পত্র, প্রয়োজনে আমরা সেখানে গিয়ে কাজ করে বেরিয়ে আসছি| সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত খুশীর মেজাজ| শব্দ নানা ধরনের হলেও তাতে ঠোকাঠুকি নেই| চলুক না আলাদা স্কেলে সরোদ আর গান| গানের পেছনে মৃদু সরোদের আওয়াজ, কখনও বা রান্নাঘর থেকে বাসনের শব্দ, সব আওয়াজই যেন মিলেমিশে খুশীর ছবি এঁকে চলেছে| ওই ছবিই কিছুটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি এই ছোট্ট ভিডিও তে| পার্টি যখন শেষ হল তখন আমার গিন্নির জন্মদিন ১৭ সেপ্টেম্বর ছুঁয়ে পরের দিন সকাল দু’টো!

আমরা সবাই মিস করলাম সুবীর, কর্নজিত, আয়ুষ, রাজরূপা, সুহাস, বিট্টু আর কুশলকে| কেউ বা ষ্টুডিও-তে আটকা, কেউ বা সেদিনই বিদেশ পারি দিল, কেউ আছে দেশের বাইরে বা কারুর বাড়ীতে পুজো| আর মিস করেছি তরাই, দেবাশিস আর তুলুকে|

 ঐদিন তোলা অল্প কিছু ছবি এই ছোট্ট এলবামে রাখা রইল|